শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

*অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করে চলছে পার্ক নির্মাণের কাজ * কল্যাণপুর জলাধারের আয়তন ৫৩ একর

কল্যাণপুরে জলাধার ঘিরে তৈরি হচ্ছে ইকোপার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫২ অপরাহ্ন, ৩রা আগস্ট ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

জলাবদ্ধতা দূর করতে রাজধানীর কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড ঘিরে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এ জলাধার ঘিরে একটি জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এখানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হলে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, কল্যাণপুর, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দূর হবে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি।

ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ডের (জলাধার) আয়তন প্রায় ৫৩ একর। কয়েক যুগ ধরে এ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বসতি গড়ে তুলেছিল একটি চক্র। সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন সে জায়গায় চলছে হাইড্রো ইকোপার্ক নির্মাণের প্রস্তুতি। গাবতলীর গৈদারটেক এলাকায় বেড়িবাঁধ লাগোয়া এ জলাধার কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড এলাকা হিসেবে পরিচিত। মোহাম্মদপুর, আদাবর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মিরপুর, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার বৃষ্টির পানি এসে এ জলাধারে (রিটেনশন পন্ডে) জমা হয়। পরে জলাধার থেকে পানি পাম্পের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়। দুই বছর আগে এ জলাধারের মালিকানা ডিএনসিসিকে হস্তান্তর করেছে ঢাকা ওয়াসা।

জায়গা বুঝে পাওয়ার পর নগরের সৌন্দর্য বাড়াতে জলাধার ঘিরে হাইড্রো ইকোপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ডিএনসিসি। সে অনুযায়ী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দিয়ে নকশা প্রণয়নের কাজ করছে সংস্থাটি। আগামী দুই বছরের মধ্যে ইকোপার্ক নির্মাণকাজ শেষ করতে চায় তারা। বর্তমানে জলাধারের চারপাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। জলাধার থেকে ময়লা-আবর্জনা ভেকু দিয়ে পরিষ্কার করেছে ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটিতে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে থাকবে—হাঁটার রাস্তা, সাইকেল লেন, প্রজাপতি ও পাখি পার্ক, কৃষি উদ্যান, খালের পাড় উন্নয়ন, শিশুদের খেলার জায়গা, বন্যার প্রভাব প্রশমনের ব্যবস্থা, বর্জ্য নিষ্কাশন ও ব্যবস্থাপনা (ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও জলাধারের সঙ্গে বর্জ্য নিষ্কাশনের যোগাযোগ পয়েন্ট), ডেনসিটি রিলিফ বা উন্মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি। থাকবে জীববৈচিত্র্য দ্বীপ, মৌমাছি পালনকেন্দ্র। ভাসমান রেস্তোরাঁ ও ফুড হাট। পদ্ম পুকুর, ফুটব্রিজ আর সিটিং কিয়স্ক। থাকবে প্রশিক্ষণকেন্দ্র, বহুমুখী সম্মেলনকেন্দ্র ও প্রদর্শনী হল। থাকবে সোলার অ্যাকুয়াটিক ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও পার্ক প্রভৃতি।

এ বিষয়ে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, কল্যাণপুর জলাধার ঘিরে একটি বিনোদনকেন্দ্র তৈরি করা যেতে পারে—এটি কেউ আগে চিন্তাও করতে পারেনি। এখন পার্ক তৈরির জন্য কাজ চলছে। এটা করতে গিয়ে নানাধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কিন্তু কোনো বাধাই আমাদের কাজ বন্ধ করতে পারবে না।

তিনি বলেন, এই ইকোপার্ক সব বয়সের মানুষের জন্য করা হবে। শিশু, নারী, পুরুষ ও বয়স্কদের সব সুবিধা সেখানে থাকবে। আমরা জলাশয়টি ঘিরে সিটি রেস্ট গড়ে তুলব। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা শহরে হাতিরঝিল প্রকল্প করে দিয়েছেন। কল্যাণপুরে আমরা তেমনি প্রকৃতিনির্ভর ইকোপার্ক নির্মাণ করব।

আরো পড়ুন: নান্দনিক রূপে ফিরছে ঐতিহ্যবাহী ‘ঢাকা গেট’

তিনি বলেন, কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ডে পাঁচটি খাল থেকে বৃষ্টির পানি যায়। যত বৃষ্টি পড়বে এই রিটেনশন পন্ডে পানি যাবে। এরপর পাম্প করে নিয়ে যাব তুরাগ নদে। এলাকাগুলোতে কোনো জলাবদ্ধতা হবে না। বাস্তবে এটি যদি ঠিক করতে না পারি, তাহলে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, কল্যাণপুর, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া পানিতে ডুবে যাবে। ইকোপার্ক যত বেশি বড় হবে, এলাকাবাসী তত বেশি সুফল ভোগ করতে পারবেন।

এম এইচ ডি/আইকেজে 

রাজধানী

খবরটি শেয়ার করুন